দলিত, হরিজন ও বেদে সম্প্রদায় নিগৃহিত বা দলনের শিকার। চরম অবহেলিত, বিচ্ছিন্ন, উপেক্ষিত জনগোষ্ঠী হিসেবে এরা পরিচিত। জেলে, সন্যাসী, ঋষি, বেহারা, নাপিত, ধোপা, হাজাম, নিকারী, পাটনী, কাওড়া, তেলী,পাটিকর ইত্যাদি তথাকথিত নিম্নবর্ণের জনগোষ্ঠী এ সম্প্রদায়ভুক্ত। সমাজের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সঙ্গে এদের সামাজিক বৈষম্যের সৃষ্টি করা হয়েছে। সমাজসেবা অধিদফতরের জরিপমতে বাংলাদেশে প্রায় ৪৩.৫৮ লক্ষ দলিত জনগোষ্ঠী, ১২.৮৫ লক্ষ হরিজন জনগোষ্ঠী এবং ৭.৮০ লক্ষ বেদে জনগোষ্ঠী রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বাঁশফোর, ডোমার, রাউত, তেলেগু, হেলা, হাড়ি, লালবেগী, বাল্মিগী, ডোম ইত্যাদি হরিজন সম্প্রদায়। যাযাবর জনগোষ্ঠীকে বেদে সম্প্রদায় হিসেবে পরিচিত। বেদে জনগোষ্ঠীর শতকরা ৯৯ ভাগ মুসলিম এবং শতকরা ৯০ ভাগ নিরক্ষর। ৮টি গোত্রে বিভক্ত বেদে জনগোষ্ঠীর মধ্যে মালবেদে, সাপুড়িয়া, বাজিকর, সান্দার, টোলা, মিরশিকারী, বরিয়াল সান্দা ও গাইন বেদে ইত্যাদি। এদের প্রধান পেশা হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসা, তাবিজ-কবজ বিক্রি, সর্প দংশনের চিকিৎসা, সাপ ধরা, সাপের খেলা দেখানো, সাপ বিক্রি, আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্য সেবা, শিংগা লাগানো, ভেষজ ঔষধ বিক্রি, কবিরাজি, বানর খেলা, যাদু দেখানো প্রভৃতি।
২০১২-২০১৩ অর্থ বছরে পাইলট কর্মসূচির মাধ্যমে ৭টি জেলায় এ কার্যক্রম শুরু হয়। পাইলট কার্যক্রমভুক্ত ৭টি জেলা হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, পটুয়াখালী, নওগাঁ, যশোর ,বগুড়া এবং হবিগঞ্জ । ২০১২-১৩ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৬৬,০০,০০০ (ছিষট্টি লক্ষ) টাকা। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নতুন ১৪ জেলাসহ মোট ২১টি জেলায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয় এবং জেলাগুলো হচ্ছে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, কুমিল্লা, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, নীলফামারী, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং হবিগঞ্জ। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৭,৯৬,৯৮,০০০.০০ (সাত কোটি ছিয়ানববই লক্ষ আটানববই হাজার) টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে পূর্বের ২১ জেলায় এ কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ৯,২২,৯৪,০০০ টাকা। নতুন ১৪ জেলায় এ কার্যক্রম সম্প্রসরাণের পরিকল্পনা রয়েছে। নতুন প্রস্তাবিত ১৪ টি জেলা হচ্ছে গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ি, নেত্রকোণা, জামালপুর, ময়মনসিংহ, লক্ষীপুর, রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, ঝিনাইদহ, বগুড়া, সাতক্ষীরা, বরিশাল এবং মৌলভীবাজার। ক্রমান্নয়ে এ কার্যক্রম দেশব্যাপী সম্প্রসারণ করা হবে।
অর্থবছর |
উপকারভোগীর সংখ্যা |
|||
শিক্ষা উপবৃত্তি |
ভাতা |
প্রশিক্ষণ |
প্রশিক্ষণ উত্তর সহায়তা |
|
২০১২-১৩ |
৮৭৫ |
২১০০ |
-- |
-- |
২০১৩-১৪ |
২৮৭৭ |
১০৫০০ |
১০৫০ |
-- |
২০১৪-১৫ |
২৮৭৭ |
১০৫৩৯ |
১০৫০ |
২১০ |
সেবা প্রাপ্তির স্থান/অফিসের নাম:
উপজেলা/শহর সমাজসেবাঅফিস
দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা / কর্মচারী:
উপজেলা / শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা
সেবা প্রদান পদ্ধতি (সংক্ষেপে):
বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে উপজেলা / শহর সমাজসেবা অফিসার বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেন। অত:পর নির্ধারিত ফরমে আগ্রহী ব্যক্তিদের সমাজসেবা অফিসার বরাবর আবেদন করতে হয় । প্রাপ্ত আবেদন ইউনিয়ন কমিটি কর্তৃক সরেজমিনে যাচাই-বাছাই করে প্রস্তাব আকারে উপজেলা কমিটিতে প্রেরণ করা হয়। অত:পর উপজেলা কমিটি যাচাই বাছাই করে বরাদ্দ অনুসারে উপকারভোগী নির্বাচন করে। নির্বাচিত ব্যক্তির নামে ব্যাংক হিসাব খোলা এবং কেন্দ্রীয় হিসাব হতে ভাতা বা উপবৃত্তির টাকা স্থানান্তর করে নির্বাচিত ব্যক্তিকে অবহিতকরণপূর্বক ভাতা বা উপবৃত্তি বিতরণ সম্পন্ন করা হয় ।
১৮ বছর বয়সের উর্ধ্ব কর্মক্ষম ব্যক্তিদেরকে ট্রেড ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় । প্রশিক্ষণার্থীদেরকে প্রশিক্ষণোত্তর অফেরতযোগ্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
সেবা প্রাপ্তির প্রয়োজনীয় সময়:
১. নতুন বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে আবেদনের ০৩ মাসের মধ্যে;
২. পুরাতন বা নিয়মিতদের ক্ষেত্রে ০৭ কর্মদিবস
প্রয়োজনীয় ফি/ট্যাক্স/আনুষঙ্গিক খরচ:
বিনামূল্যে
সংশ্লিষ্ট আইন/বিধি/ নীতিমালা:
বিশেষ ভাতা ৩০০/- মাসিক
উপবৃত্তি :
প্রাথমিক-৩০০/-
মাধ্যমিক-৪৫০/-
উচ্চ মাধ্যমিক-৬০০/-
স্নাতক বা স্নাতকোত্তর-১০০০/-
প্রশিক্ষণ;
প্রশিক্ষণার্থীদের আর্থিক সহায়তা ১০,০০০/- (অফেরতযোগ্য)
দলিত, হরিজন ও বেদে জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি নীতিমালা ২০১৩
নির্দিষ্ট সেবা পেতে ব্যর্থ হলে পরবর্তী প্রতিকারকারী কর্মকর্তা
১. চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদ (সংশ্লিষ্ট উপজেলা)
২. জেলা প্রশাসক (সংশ্লিষ্ট জেলা) বা সিটিকরপেরেশন / পৌরসভার ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা / আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (সংশ্লিষ্ট প্রশাসন)
৩. কর্মসূচি পরিচালক